অবাক করা আইপিএলের সেরা ৯টি বিতর্কিত কান্ড! যা আপনি আগে জানতেন না
ক্রিকেটকে বলা হয় ভদ্রলোকের খেলা , খেলা শেষে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের সাথে হাত মেলানো , আলিঙ্গন , জুতার ফিতে বেধে দেওয়ার মত অনেক সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত ঘটে এই ভদ্রলোকের খেলা খ্যাত ক্রিকেটে । আর এই ক্রিকেটের সবথেকে বড় ঘরোয়া লিগ অনুষ্ঠিত হয় ভারতে যেটা ভারতিও প্রিয়িমার লিগ ( আই পি এল ) । কোনোকিছুই যেমন বিতরকের ঊর্ধ্বে নয় তেমনি ভারতীও প্রিয়িমার লীগ আই পি এলেও আছে উল্লেখযোগ্য কিছু বিতর্ক । প্রত্যেক আসরে জন্ম নিয়েছে নানাবিধ বিতর্ক ও সমলোচোনা আজকের এই আর্টিকেল তেমনি কিছু বিতর্কিত ঘটনাকে ঘিরে চলুন দেখে নেওয়া যাক :
১। শ্রিশান্তকে হরভজনের চড় : ২০০৮ সালের আই পি এলে কিংস ইলিভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এর মধ্যকার ম্যাচের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ভারতীও বোলার হরভজন সিং । ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের সাথে হাত মেলানোর সময় হরভজনের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন শ্রিশান্ত , কিন্তু সেই হাতে হাত না মিলিয়ে শ্রিশান্তের গালে সজোরে চড় বসিয়ে দেন হরভজন সিং । এই ঘটনার পরে সেই আসরে বাকি ম্যাচ গুলো থেকে নিষিদ্ধ হন হরভজন সিং । সে ম্যাচের ম্যাচ ফির ১০০ শতাংশ জরিমানা করা হয় তাকে ।২। পাকিস্তানি খেলোয়াড় এর নিষেধাজ্ঞা : ২০০৮ সালের আই পি এলে খেলেছিলেন পাকিস্তানের তারকা খেলোয়াড়রা , সে বছর মুম্বাইতে হামলার পর আই পি এলেরর পরবর্তী আসরে পাকিস্তানী খেলোয়াড়দের খেলতে আসা এবং নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন হন পাকিস্তান সরকার । আই পি এলে তাদের অংশগ্রহণে জারি হয় নিষেধাজ্ঞা , তবে ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের বাসের উপর হামলা হলে আই পি এলে পাকিস্তানী খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণের ব্যাপারে কঠোর হয় ভারতীও ক্রিকেট বোর্ড এবং তাদের নিষিদ্ধ করা হয় আই পি এল থেকে ।
৩। ললিত মোদীর অপসারণ : BCCI এবং ললিত মোদীর একান্ত প্রচেষ্টাই ২০০৮ সাল থেকে মাঠে গড়ায় আই পি এল । তিনি ছিলেন আই পি এলের তৎকালীন চেয়ারম্যান । যার একান্ত প্রচেষ্টায় আই পি এলের যাত্রা ২০১০ সালের আই পি এল চলাকালীন বিদেশে অর্থ পাচার , বাজি ধরা , ঘুয প্রদান সহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করে আই পি এল থেকে সারাজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় তাকে ।
৪। কলকাতা টিমে উপেক্ষিত সৌরভ গাঙ্গুলি : ২০০৮ থেকে ২০১০ এই তিন আসরে কলকাটা নাইট রাইডারস এর হয়ে খেলেন প্রিন্স অভ ক্যালকাটা সৌরভ গাঙ্গুলি । এই তিন আসরে তিনি ছিলেন কলকাটা নাইট রাইডারস এর অধিনায়ক । প্রথম তিন আসরে কলকাতা চরম বার্থ হয় তাই ২০১১ সালে আই পি এল নিলামে সৌরভের প্রতি কোনো আগ্রহ দেখায়নি কলকাতার টিম ম্যানেজমেন্ট । এই নিয়ে শুরু হয় প্রতিবাদ " no dada no KKR " স্লোগানে ফ্যানদের প্রতিবাদ করতে দেখা যায় । ইডেন গার্ডেনে ভাটা পড়ে দর্শকের ।
৫। চিয়ারলিডারদের বিস্ফোরক মন্তব্য : ২০১১ সালে আই পই এল নইয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন ২২ বছর বয়সী দক্ষিণ আফ্রিকান চিয়ারলিডার গাব্রিয়ালা পাস্কুয়ালদো । তিনি জানান ম্যাচ পরবর্তী সময়ে তাদের প্রতি অশোভন আচরণ করেন খেলোয়াড় রা । তিনি এও বলেন তাঁদের প্রতি অর্থনীতিক সম্পর্ক স্থাপন ও যৌন হয়রানিমূলক চাপ প্রদান করা হয় । এমন মন্তব্য করার পর আই পই এলের পরবর্তী ম্যাচ গুলোতে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়।
৬। ওয়াংখেড় স্টেডিয়াম থেকে নিষিদ্ধ শাহরুক খান : ২০১২ সালে ওয়াংখেড় স্টেডিয়াম এর নিরাপত্তা কর্মীদের সাথে কথা কাটাকাটিতে জড়ান বলিউড বাদশা ও কলকাটা নাইট রাইডারস এর মালিক শাহ্রুক খান । নিয়ম বহির্ভূতভাবে মাঠে প্রবেশ করতে চান তিনি তাতে বাধা দেন নিরাপত্তা কর্মীরা। শাহ্রুজের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা কর্মীদের গালিগালাজ ও নেশাগ্রস্থ অবস্থা মাঠে প্রবেশ করতে চাওয়ার অভিযোগ ওঠে । তাকে ৫ বছরের জন্য ওয়াংখেড় স্টেডিয়াম থেকে নিষিদ্ধ করে মুম্বাই ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশন ।
৭। বিরাট কোহলি ও গৌতম গম্ভীর দ্বৈরথ : বিরাট কোহলী ও গৌতম গম্ভীর দুজনই ছিলেন তৎকালীন ভারতীও দলের সতীর্থ , আই পি এল ও নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন নিজ নিজ দলের হয়ে । কলকাতা নাইট রাইডারস এর বিপক্ষে রয়েল চালেঞ্জারস বাঙ্গালুরুর হয়ে বাট করছিলেন বিরাট কোহলি , সেসময় লক্ষপতি বালাজির ১ বলে আউট হয়ে সাজ ঘরে ফিরছিলেন বিরাট । উদযাপনের ভেতর কিছু একটা বলতে শোনেন বিরাট , তেড়ে যান গম্ভীরের দিকে । গম্ভীরও ধেয়ে আসেন বিরাটের দিকে এবং সৃষ্টি করেন বিতর্কিত পরিস্থিতি ।
৮। ম্যাচ চলাকালীন আনুস্কার পাশে বিরাট : ২০১৫ সালের আই পি এলের নবম আসরের ঘটনা , এম চেন্নাসমী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় দিল্লি ডিয়ারডেভিলস বনাম রয়েল চালেঞ্জেরস বাঙ্গালুরু । মাঠে বৃষ্টির কারণে বন্ধ ছিল খেলা । খেলোয়াড়দের সাজঘর সংলগ্ন পাশের VIP গ্যালারিতে ছিলেন ভিরাটের তৎকালীন বান্ধবী আনুস্কা । সেখানে বিরাটের উপস্তিথি লক্ষ করা যাই , নিয়ম অনুসারে খেলা চলাকালীন সময়ে খেলোয়াড়দের স্ত্রী , বান্ধবী দের সাথে দেখা করা নিযিদ্ধ থাকলেও তার কোন তোয়াক্কা করেননি বিরাট ।
৯। ফিক্সিং : আই পি এলের ষষ্ঠ আসরে এসে দিল্লি পুলিশ ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে আটক করেন রাজস্থান রয়েলসের তিন ক্রিকেটার এস শ্রিশান্ত , অঙ্কিত চাবান এবং অজিত চান্দিলাকে । পুলিশের ধারনা ছিল এরা আন্ডারগ্রউন্ডের ডন দাউদ ইব্রাহিম এবং ছোট্ট শাকিলের হয়ে এসব করছে। ভারতীয় তৎকালীন জাতীয় দলের ক্রিকেটার শ্রিশান্তকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় ।
No comments